ব্ল্যাক হোল নিয়ে নতুন তথ্য, ব্ল্যাক হোলকে মহাকাশের দানব বলে মায়াজালের শেষ নেই। ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে রয়েছে যত জটিল সব সমীকরণের যার কারণে, জানার আগ্রহ মানুষের কখনো শেষ হবে না। কেননা, এটি প্রকৃতির নানা রহস্যে ঘেরা এক বিস্ময়কর সৃষ্টি।

ব্ল্যাক হোল নিয়ে নতুন তথ্য

ব্ল্যাক হোল নিয়ে নতুন তথ্য ও মহাকাশের যত রহস্য

কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল হলো মহাকাশের এমন একটি স্থান, যেখানে মাধ্যাকর্ষণ বল এতটাই শক্তিশালী যে, সেখান থেকে কোনো কিছুই বের হতে পারে না। এমনকি আলোর মতো তড়িৎ-চৌম্বকীয়(Electromagnetic) বিকিরণও এই প্রচণ্ড আকর্ষণ বল(The force of attraction) ভেদ করে বের হয়ে আসতে ব্যর্থ হয়।

আরও পড়ুন:

ব্ল্যাক হোল নিয়ে আদি ইতিহাস

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে ব্রিটিশ ভূতত্ত্ববিদ জন মিচেলের(John Michell) সর্বপ্রথম ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে তথ্য জানিয়েছেন। ১৭৮৩ সালে John Michell বলেন, যদি একটি বস্তুর আকার যথেষ্ট ছোট ও ভর যথেষ্ট হয়, তবে তার মহাকর্ষের(Gravity) প্রভাবে সেখান থেকে কোনো আলোক তরঙ্গ(Light waves) বের হয়ে আসতে পারে না। তিনি এদের নাম দেন অন্ধকার নক্ষত্র(Dark stars).

এর অনেক বছরপর কৃষ্ণগহ্বর অস্তিত্বের সম্ভাবনা রয়েছে এমন ধারণা প্রদান করেছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন। ১৯১৬ সালে তিনি এ ধারণা দেন তার জেনারেল Relativity তত্ত্বে।

তবে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল নামটির সঙ্গে ১৯৬৭ সালে সর্বপ্রথম আমাদের পরিচয় করিয়ে দেন বিজ্ঞানী হুইলার(John Archibald Wheeler).চ্যাপেল হিলে(Chapel Hill) অবস্থিত নর্থ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল জ্যোতির্বিজ্ঞানী এই কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে সম্প্রতি সময়ে নতুন তথ্য পেয়েছেন।

এই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, আগে উপেক্ষিত কিছু পরিত্যক্ত গ্যালাক্সিতে বিদ্যমান বিশাল ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেয়েছেন। ব্ল্যাক হোল নিয়ে তাদের এই বিস্তারিত গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে ক্যারোলাইনা গ্র্যাজুয়েট স্কুলের রিপোর্টে।

ব্ল্যাক হোল(Black Hole) নিয়ে আধুনিক তথ্য

আশা করা হচ্ছে, তাদের করা সমীক্ষার তথ্য আমাদের নিজস্ব গ্যালাক্সি মিল্কি ওয়ের বিশাল ব্ল্যাক হোলের উৎস সম্পর্কে নতুন তথ্য দেবে।

ব্ল্যাক হোল(Black Hole) সম্পর্কে নাসার(NASA) বক্তব্য, একটি মৃত নক্ষত্র থেকে ব্ল্যাক হোলের উৎপত্তি ঘটে থাকে। এই নক্ষত্র(STARS) গুলো নিউক্লিয়ার ফিউশনের মাধ্যমে নিজের কেন্দ্রে সংকুচিত হয় ফলে বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিপুল শক্তির উৎপন্ন করে। যার ফলে সুপারনোভার অবস্থা তৈরি হয়। এই সুপারনোভার(Supernova) ফলে নক্ষত্রের কেন্দ্রে বিপুল বিস্ফোরণ সংঘটিত হয় এবং তা মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে নর্থ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নতুন তথ্যানুযায়ী, ছোট আকারের ব্ল্যাক হোলগুলো হাজার হাজার পরিত্যক্ত গ্যালাক্সি ছেড়ে ধীরে ধীরে নিজেদের মধ্যে দানা বেঁধে বড় আকারের ব্ল্যাক হোল তৈরি করে। আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতে এ ধরনের ব্ল্যাক হোল রয়েছে।

আরও পড়ুন: আসছে নতুন সুপারসনিক যাত্রীবাহী বিমান

তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণায় আরও জানা গিয়েছে, আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কি ওয়ের ঠিক মাঝখানে থাকা বড় আকারের ব্ল্যাক হোলটি ধীরে ধীরে আশপাশের ছোট ছোট গ্যালাক্সির ব্ল্যাক হোল আত্মসাৎ করে আকারে আরও বড় হচ্ছে। মহাকাশের প্রায় ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই এমনটা হতে দেখা যায় বলে দাবি করেন নর্থ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: নিউজ ১৮ বাংলা ও সময়নিউজ টিভি

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন