উত্তর বঙ্গের শিল্প নগরী হিসেবে খ্যাত বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে শিবগন্জ থানার মহাস্থান নামক স্থানে মহাস্থানগড় অবস্থিত। করোতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত মহাস্থান গড়ের প্রাচিন নাম পুন্ড্র নগর এখানে পাওয়া প্রত্নত্বাত্তিক নির্দশন থেকে জানা যায়।

Mahasthangarh

মহাস্থানগড় ও তার ইতিহাসঃ

খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দি থেকে খ্রিষ্টীয় ১৫ শ শতাব্দির মধ্যে এই নগরি একটি সমৃদ্ধিশালি জনপদ হিসেবে গড়ে উঠেছিল। বেশ কয়েক শতাব্দি পর্যন্ত এখানে  মৌরজি ও পাল বংশের প্রাদেশিক রাজধানি ছিল। সর্বশেষ, শাসক পরশুরাম সময় পর্যন্ত প্রাচিন বাংলাদেশের প্রথম রাজধানি ছিল। মুসলিম যুগের প্রথম দিকে বিখ্যাত দরবেশ ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য এখানে আসেন তার নাম ছিল হযরত শাহ্ সুলতান বলখী মাহিশাওর  (র)।

History of Mahasthangarh | মহাস্থানগড়ে ইতিহাস ও ভ্রমণ তথ্য

এই মহাপুরুষ ইসলাম প্রচারের জন্য সুদূর বল্লখদেশ থেকে এই মহাস্থান গড়ে আগমন করেন। তিনি এখানে এসে হিন্দুরাজা পরশুরাম কে পরাজিত করেন এবং ইসলাম ধর্ম সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং মৃর্তকালে তিনি এখানেই শায়িত আছেন। এই নগরির ধ্বংসাবশেষ এর বিবরণ প্রথম লিপিবদ্ধ করেন প্রত্নত্বাত্তিক ভূ-কানন ১৮২০ সালে।

এছাড়াও চিনা পর্যটক  ইউঅ্যান সাং ও আলেকজেন্ডার ক্যানিং হাম এই নগরি পরিদর্শন করেন। ১৮৭৯ সালে এটি প্রাচিন পুন্ড্রনগরির ধ্বংসাবশেষ বলে চিহ্নিত করা হয়। ১৯২৮-২৯ সালে প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত বিদ ইউএন দিক্ষিতের পরিচালনায় এর খননের কাজ শরু করা হয়।

মহাস্থানগড় ইতিহাস ও মহাস্থানগড় কেন বিখ্যাত?

প্রাচিন এক সময় মহাস্থানগড় বাংলাদেশের রাজধানি ছিল। ইতিহাস থেকে জানা যায় যিশু খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে থেকেই এখানে জনপদ গড়ে ওঠে। এখানে কয়েক শতাব্দির মৌর্য, পাল, গুপ্ত ও সেনদের প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। গৌড় থেকেই গড়ের উৎপত্তি। ১০৮২-১১২৫ সাল পর্যন্ত অরক্ষিত রাজ্যের রাজা ছিল লক্ষণ সেন। পরবর্তীতে রাজা ছিলেন নল।

আরো পড়ুনঃ সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ ও নিরাপদ হোটেল তালিকা

তার আবার আরেকটি ভাই ও ছিল তার নাম ছিল নীল। রাজ্য নিয়ে নল ও নীলের মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকত। ঠিক এমন সময় ভারতের দক্ষিণাতের শ্রীক্ষেত্র নামক জায়গায় থেকে এক অভিশপ্ত ব্রাহ্মণের আগমন ঘটে। যিনি কিনা তার পাপের প্রায়শ্চিত করতে করতে এখানে আসেন। তিনি পরশু বা কুঠার দিয়ে তার মাকে হত্যা করে অভিশপ্ত হন। তিনিই এই দুই ভাইয়ের দন্দের অবসান ঘটান এবং পরবর্তিতে তিনিই এই রাজ্যের রাজা হন।

তার আসল নাম হলো রাম। তিনি পরশুরাম নামেই পরিচিত। এক সময় বল্লখ দেশ থেকে এক আধ্যাতিক ফকিরের আগমন ঘটে প্রাচিন এই নগরিতে। তার নাম ছিল হযরত শাহ্ সুলতান মাহমুদ বলখি মাহিসাওর (র:) যিনি শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে এখানে আসেন।

তার কিছু আধ্যাতিক কর্মকান্ড দেখে প্রাচিন পুন্ড্রনগরীর দলে দলে হিন্দু ধর্মের মানুষরা ইসলাম গ্রহণ করতে লাগল। এ নিয়ে ( ১২০৫-১২২০) এটা নিয়ে রাজা পরশু রামের সাথে যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং এ যুদ্ধে হযরত শাহ্ সুলতান (রঃ) পরশুরামকে পরাজিত করেন ।

মহাস্থানগড় গুরুত্বপূর্ণ কেন?

১৮০৮ সালে ফ্রান্সিস বুকানন,হ্যামিলটন প্রথম মহাস্থান গড় আবিষ্কার করেন। পরবর্তিতে ১৮৭৯ আলেক্সজেন্ডার ক্যানিংহাম তিনিই এই নগরিকে পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানি বলে অভিহিত করেন। এছাড়াও সি,জে ও ডোনেল ই,ভি, ওয়েস্টম্যাকট ,হেনরি বেভারিজ প্রমুখ লোক উক্ত এলাকাটি পরিদর্শন করেন । ১৯৩১ সালে খনন করে মেলে ব্রাহ্মি লীপি উক্ত লীপিতে পাওয়া যায় সম্রাট অশোক কিভাবে দুভিক্ষ মানুষদের কে রাজ ভান্ডার থেকে অর্থ ও অন্ন প্রদানের নির্দেশ দেন।

মহাস্থানগড় এর দর্শনীয় স্থানঃ

দূর্গ কাঠামো ছাড়াও প্রায় শতাধিক ঢিবি ৯ কি.মি এলাকা জুড়ে অবস্থান করছে।

তারমধ্যেঃ খননকৃত ঢিবির মধ্যেঃ

  • গোবিন্দ ভিটা
  • খুল্লনার ধাপ
  • মঙ্গলকোট
  • গদাইবাড়ি ধাপ
  • তোতারাম পন্ডিতের ধাপ
  • নরপতির ধাপ
  •  গোকূল মেধ
  • স্কন্ধের ধাপ
  • বৈরাগির ভিটা

অখননকৃত ঢিবিঃ

  • শিলাদেবীর ঘাট
  • ধনিকের ধাপ
  • চুনোরুদিঘীর ধাপ
  • রাসতলা ধাপ
  • মন্দিরির
  • শশিতলা ধাপ
  • কৈব্লিকির ধাপ
  • দরগাহ্
  • চাঁদের ধাপ
  • জুরাইনতলা  , 
  • বিষমর্দন
  • সন্ধিনাথ ধাপ
  • পরশুরামের
  • মলিনার ধাপ
  • শালিবাহন বাজার
  • বলাই ধাপ
  • প্রাচির ঢিবি
  • মলিনান ধাপ
  • ঢিবি
  • কঞ্জির হাড়ি ধাপ
  • মঙ্গলনাথের ধাপ
  • ধনভান্ডার ঢিবি
  • কাঁচের আঙ্গিনা
  • লহনার ধাপ
  • খোজার ঢিবী
  • কানাই ধাপ
  • কেদার ধাপ
  • সন্নাসির ধাপ
  • দশহাতির ধাপ
  • পদ্মার বাড়ি  ইত্যাদি।

মহাস্থানগড় খনন কাজ ও সিন্ধু সভ্যতার খনন কাজে নেতৃত্ব দেন কে?

আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কে.এন দিক্ষিত ১৯৮৮-২৯ খ্রি: প্রথম খনন কাজ শুরু করেন। পরবর্তিতে ১৯৩৪-৩৬ খ্রিঃ খনন স্থগিত রাখেন। ১৯৩১ সালে খননের সময় পাওয়া যায় ব্রাহ্মী লিপি। তারপর ১৯৬০ সালে উত্তর দিকে পরশুরামের প্রসাদ ,জিয়ৎ কুন্ড ,খনন করা হয়।

আরো পড়ুনঃ কক্সবাজার ভ্রমণ ও নিরাপদ হোটেল তালিকা

পরবর্তী খনন কাজ গুলা নানা সময়ে নানা ভাবে করা হয়। এরপর ১৯৮৮-১৯৯১ পর্য্ন্ত পুনরায় খনন কাজ পরিচালনা করা হয়। এভাবে প্রায় প্রতি বছরই আজ অব্দী খনন এর কাজ চলছেই । 

মহাস্থান গড়ে ৭ টি যুগের সাথে আমরা পরিচিত হই তা হলোঃ

প্রথম যুগঃ এখানে মৌর্যদের কিছু সংস্কৃতি আমরা খুজে পাই। যা দক্ষিণ ভারতিয় কালো, লাল এবং ধুসর রঙ্গের মসৃণ অনেক মাটির তৈরি তৈজষ খুঁজে পাওয়া যায়।

দ্বিতীয় যুগঃ দ্বিতীয় যুগে সাধারনত পোড়া মাটির ফলকে এর নিদর্শন পাওয়া যায়। যা খ্রিষ্টপূর্ব ৩৬৬-১৬২ অব্দে এ সংস্কৃতির পর্য্য় মৌর্য যুগের মধ্যেও পড়ে। 

তৃতীয় যুগঃ এটি সাধারণত খ্রিষ্টপূর্ব ১৯৭-৪৭  অব্দে, খ্রিষ্টপূর্ব ৪০ অব্দ থেকে ১২২ খ্রিষ্টাব্দ। এ যুগের নিদর্শন হিসেবে রৌপ, মূদ্রা, রুপার বালা পোড়া মাটির ফলক ইত্যাদির নিদর্শন পাওয়া যায়। 

চতুর্থ যুগঃ এই সময় কালকে কুষাণ গুপ্ত যুগ বলে আখ্যায়িত করা হয়। মৃৎ পাত্রের টুকরা নকশা সহ রান্নার পাত্র,গামলা, ঢাকনি, পিড়িচ, ভাঙ্গা ইটের টুকরো ও পোড়া মাটির সিলমোহর এর নিদর্শন পাওয়া যায়। 

পঞ্চম যুগঃ এ যুগ কে গুপ্ত যুগ বলে গন্য করা হয়। এটির সময় কাল ৩৬১-৫৯৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এ সময় নগরির নিকটে গোবিন্দ ভিটা নামের ইট দিয়ে নির্মিত সুবিশাল মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এবং আশেপাশের ইটের রাস্তার নিদর্শন পাওয়া যায়। 

ষষ্ঠযুগঃ এটি পাল যুগের আবির্ভাব কে নিদর্শন করে। এ সময় নির্মিত নগরের পূর্ব প্রান্তে খোদার পাথর ভিটা, মনকালির কুন্ড ধাপ, বৈরাগীর ভিটা ও পরশুরামের প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। নগরের বাইরের দিকে অনেক বৌদ্ধ ইমারত নির্মান করা হয়েছিল। এটি ছিল সমৃদ্ধ শালি যুগ।

সপ্তম যুগঃ  এই যুগে মুসলিম যুগের নিদর্শন পাওয়া যায়। ধ্বংসাবশিত মনকালীর কুন্ডের উপর নির্মিত ১৬ গম্বুজ বিশিষ্ঠ্য মসজিদের ধ্বংসাবশেষ এর নিদর্শন পাওয়া যায়। নগরির ভিতরে বৈরাগির ভিটা, খোদার পাথর ভিটা, জিয়ৎ কুন্ড, পরশুরামের প্রাসাদ আবিষ্কার হইছে।

১৯৮৮-৯১ সালে খননের ফলে নগরের প্রবেশের জন্য তিনটি প্রবেশ দ্বার পাওয়া যায়। এছাড়াও উত্তর ও পূর্ব  দিকের রক্ষা প্রাচির পাওয়া যায়। এছাড়াও মাজার এলাকার আশেপাশে মন্দিরের নিদর্শন পাওয়া যায়।

মহাস্থানগড় সম্পর্কে রচনাঃ 

এই স্থানটি বগুড়া শহর থেকে ১৩ কি.মি উত্তরে বগুড়া ঢাকা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। পাশ দিয়েই বয়ে গেছে করতোয়া নদী। ঢাকা থেকে বাসে যাওয়ার জন্য ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জ ছেড়ে আসতে হবে বগুড়া শহরে। কাছাকাছি কোনে এয়ারপোর্ট নেই । আর দূরে হলেও এআরবাস পাওয়া একটু মুসকিল।

আরো পড়ুনঃ জমির নামজারি করার নিয়ম

তাই বাস যোগেই যেতে সহজ হয়। যেতে ৫ ঘন্টা সময় লেগে যাবে। শহর থেকে ১৩ কি.মি উত্তরে মহাস্থানগড়। সি এন জি মোটর কিম্বা রিকশাতেও যেতে পারেন।

মহাস্থানগড় বগুড়া দর্শনীয় স্থানঃ

খোদার পাথর ভিটাঃ

এটি ৪ কোনাকৃতির  একটি মসৃণপাথর যা প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। কথিত আছে রাজা পরশুরাম এটা সংগ্রহ করেন এবং বলি দেওয়ার কাজে ব্যবহার করতেন। হিন্দু মেয়েরা এখানে দুধ ও সিঁদুর দিয়ে স্নান করতো কেউ আবার দুধ ঢেলে ভক্তি করতো। ১৯৭০ সালে উক্ত ঢিবি খনন করে তাতে ১ টি মন্দির ও কিছু প্রত্নত্বাত্তিক নিদর্শন মেলে। সেই সাথে ৩ টি বৌদ্ধ মন্দির ও পাওয়া যায়। `

মহাস্থানগড় মাজার শরিফঃ

১৪ শ শতাব্দির একজন ইসলাম প্রচারক হযরত শাহ্ সুলতান মাহমুদ বলখী (রঃ) এর মাজার শরিফ রয়েছে। কথিত আছে, তিনি মাছ আকৃতির নৌকায় চড়ে তার শিষ্য সমেত এই এলাকায় আসেন ধর্ম প্রচারের জন্য। এজন্য তাকে মাহিসাওর বলা হয়। ১৬৮০ সালে, সৈয়দ বংশের আওরঙ্গজেব, তহির ও সৈয়দ আব্দুর রাহ্মান এই তিন ভাইয়ের উপর মাজার শরিফের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অনেকেই এই মাজার শরিফে আসেন তাদের মরস্কামনা পূর্ন করার জন্য। 

মহাস্থানগড় জাদুঘরঃ

প্রায় ১০একর জায়গায়র উপর নিমৃত  এই জাদুঘর। বগুড়া থেকে ৭ কি.মি উত্তরে গোবিন্দ ভিটার অপজিটে অবস্থিত। ১৯৬৭ সালে এটি নির্মিত মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন এবং মুসলিম যুগের নিদর্শন গুলো উক্ত জাদুঘরে অবস্থান করে নিয়েছে।

এখানে রয়েছে– সোনা, রুপা, ব্রোঞ্জ , পাথর, কাসা, পোড়ামাটির ফলক ও পোড়ামাটির মূর্তি, কুষন, ইট ও বিভিন্ন শিলালিপি ধারালো অস্ত্র, তৈজস ইত্যাদি প্রত্নত্বাত্তিক নিদর্শন এখানে স্থান পেয়েছে।

মহাস্থানগড় স্কন্ধের ধাপঃ  এটি একটি প্রাচিন পুন্ড্রনগর এর একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। উক্ত মন্দিরের অবস্থান মহাস্থান থেকে ৩ কি.মি দূরে দক্ষিন দিকে একটি জলাশয়ের পাশেই অবস্থিত। ইতিহাস থেকে জানা যায় উক্ত মন্দির টি কার্তিকের মন্দির ছিল।

মহাস্থানগড় মানকালির ঢিবিঃ মানকালীর ঢিবি এটি এমন একটি স্থান যেখানে একই জায়গায় মন্দির ও মসজিদের অবস্থান। ১৯৬৫-১৯৬৬ সালে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের অধিনে এখানেন খনন কাজ শুরু করা হয়। এখানে সুলতানি আমলের মসজিদের ধ্বংসাবশেষ খুজে পাওয়া যায়। উক্ত মসজিদের আয়তন ২৬.২১ ধেকে ১৪.৫৪ মিটার। এই মসজিদটি খননের সময় মসজিদের নিচে একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এর নিদর্শন পাওয়া যায়। জানা যায় যে, এই মন্দির টি নির্মাণ করেন রাজা মান সিংহ ও তার ভাই ভান সিংহ।

মহাস্থানগড় গোকুল মেধঃ

গকুল গ্রামে অবস্থিত বলে স্থান টি গকুল মেধ মন্দির নামে পরিচিত। এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেও পরিচিত সমতল ভূমি থেকে এর উচ্চতা ৪৩ ফুট। ১৯৩৪-৩৬ সালে এ ঢিবি টি খনন কালে। এখানে ১৭২ টি ভরাট কুঠুরি আবিষ্কৃত হয়। মূলত এটি বৌদ্ধদের একটি ধর্মিয় উপাসনালয় ছিল। এটি সম্রাট অশোক নির্মাণ করেছিল। আমাদের দেশেএ যাবৎ কালে  আবিষ্কৃত সবচাইতে বড় এবং প্রাচিন নগরির ধ্বংসাবশেষ এই মহাস্থান গড়।

মহাস্থানগড় গোবিন্দ ভিটাঃ

এই প্রত্নতত্ব স্থানটি করতোয়া নদীর বাকেঁ দূর্গনগরির সন্নিকটে উত্তর দিকে অবস্থিত। খ্রিষ্ট্রিয় ১২শ-১৩শ শতকে রচিত সংস্কৃত গ্রন্থ করতোয়া মহাত্ন্যা মন্দিরটির কথা উল্ল্যেখ রয়েছে। একে গবিন্দ ও বিষ্নু মন্দির নামেও পরিচিত। মহাস্থান থেকে ৭ কি,মি উত্তর–পশ্চিমে এটি প্রথম ১৯২৮-২৯ সালে।

পরবর্তিতে ১৯৬০ সালে খনন কালে খ্রিষ্ট পূর্ব ২য় শতক থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন যুগের প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার হয়েছে। খননের কারনে যে ইমারতগুলি আবিষ্কিৃত হয়েছে তার মধ্যে পুর্ব ও পশ্চিমের ২ টি মন্দিরের ধ্বংসাবশেস খুবই গুরুত্বপূর্ন। মন্দির ২ টি একটি মজবুত বেষ্টনি প্রাচিরের মধ্যে অবস্থিত।

মহাস্থানগড় পরশুরামের প্রাসাদঃ পরশুরামের প্রাসাদ টি গড়ের প্রাচির সীমানার ভেতরে প্রাচিন যে সভ্যতা আবিষ্কিৃত হয়েছে তার একটি। তার প্রাসাদ কে হিন্দু নৃপতি বা পরশুরামের প্যালেস নামেও পরিচিত।

মহাস্থানগড় জিয়ৎ কুন্ডঃ ইতিহাস থেকে জানা যায় রাজা পরশুরাম তার আহত সৈন্যদেরকে এই কুন্ড বা কুয়ার পানি পান করিয়ে সুস্থ করতেন। যদিও এটি একটি ভিত্তিহিন লোক কথা ।

মহাস্থানগড় শীলাদেবীর ঘাটঃ  শীলা হল রাজা পরশুরামের ছোট বোন। গড়ের পূর্বেই রয়েছে করতোয়া নদী তার পাশেই এই ঘাট। শীলা দেবী এখানেই গোসল করতেন। তাই এখানে প্রতি বছর হিন্দুরা এখানে স্নান করেন এবং ১ দিনের জন্য একটি মেলাও বসে।

মহাস্থানগড় ভিমের জঙ্গলঃ মহাস্থান গড়ের ৩ দিকেই বেষ্টিত ঐতিহাসিক স্থান সমৃদ্ধ বিরাট এ জঙ্গল।

মহাস্থানগড়ের ছবিঃ

মহাস্থানগড়ের ছবি

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করি, আপনাদের অনুচ্ছেদটি অনেক ভালো লেগেছে। আপনাদের মতামত কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিন। আপনারা এই মহান ঐতিহাসিক স্থানটি ভ্রমণ করতে পারেন। এখানে আপনাকে অনেক আনন্দ দেবে, তাই আপনার পরিবার পরিজন অথবা বন্ধুদের সাথে মিলে ভ্রমণ করুন। আপনার দেশের এই ঐতিহাসিক স্থানের কাহিণী সবার মাঝে শেয়ার করে বাংলাদেশের মানকে বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিন। তাই এটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন