গত ১ দশকে আমাদের দেশের জিডিপি’র হার বৃদ্ধি পেয়ে এখন প্রায় ৩.৫ গুণ হয়েছে। তবে আয়কর-জিডিপি অনুপাতে উল্লেখযোগ্য ভাবে কোন পরিবর্তন আসেনি। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৫৬-লক্ষ TIN রেজিষ্ট্রেশন কারীর মধ্যে ৪৩ দশমিক ৪০ শতাংশ যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন।

আমাদের সমাজের মানুষের করযোগ্য আয় রয়েছে, তা সত্ত্বেও সমাজের একটা বড় অংশ এখনো আয়করের আওতায় আসেনি। তবে খুবই ভাল কথা হলো শতভাগ ব্যাংকে কর্মরত ব্যক্তিগণ বর্তমানে করজালের আওতায় রয়েছেন।

Banker’s income tax return (ব্যাংকারের আয়কর রিটার্ন: করবর্ষ 2022-2023)

ব্যাংকে কর্মরত ব্যক্তিগণের করফাঁকির দেওয়ার কোন সুযোগ একেবারেই নেই। তবে যথাযথ সময়ে সঠিক কর-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দ্বারা তারা তাহাদের করদায় নুন্যতম পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারবেন। ব্যাংকারগণ জানে কিভাবে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত/ দাখিল করতে হয় এ সম্পর্কে তাহাদের সঠিক স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে। কিন্তু যারা তৃতীয় পক্ষের সহযোগিতা নিয়ে রিটার্ন দাখিল করেন, আশা করি আজকের আর্টিকেল তাদেরকে নিজ থেকে রিটার্ন প্রস্তুত/ দাখিল করতে অনুপ্রাণিত করবে।

আয়কর কর্মকর্তাগণের নিকট একজন করদাতার প্রতি বছরে আয়, ব্যয়, দায় এবং সম্পদের সঠিক তথ্যসমূহ নির্ধারিত কর ফরমে উপস্থাপন করার মাধ্যমই হচ্ছে আয়কর রিটার্ন। যদি আপনার করযোগ্য আয় থাকে বা আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থাকে। তাহলে আপনাকে প্রতিবছর ৩০শে নভেম্বরের (ছুটি থাকলে পরবর্তী কার্যদিবসের) মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে হয় হবে।

12 Digit এর E-TIN গ্রহণ করেছেন এমন সকল ব্যক্তিগণদের রিটার্ন দাখিল করতে হবে। অপরদিকে, বাংলাদেশে Fixed-based নেই এমন অনাদদদবাসীকে এবং করযোগ্য আয় নেই এমন কেউ যদি জমি ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ বা জমি বিক্রয়ের জন্য ই-টিআইএন নিয়ে থাকেন তাহলে তাঁকে রিটার্ন দাখিল করতে হয় না।

আমাদের দেশে করদাতাগণের করমুক্ত আয়ের সীমা দেওয়া হয়েছে ৩.০০ লক্ষ টাকা। যেসব করদাতা ব্যক্তির বয়স ৬৫ বছরের বেশি বা মহিলা হলে করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৩.৫০ লক্ষ টাকা। আনার প্রতিবন্ধী করদাতা ব্যক্তি ক্ষেত্রে যা ৪.৫০ লক্ষ টাকা এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ক্ষেত্রে যা ৪.৭৫ লক্ষ টাকা।

ঢাকা উত্তর/ ঢাকা দক্ষিণ/ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে হলে একজন করদাতার ন্যূনতম আয়কর হবে ৫,০০০ টাকা, আবার করদাতা অন্য সিটি কর্পোরেশন এলাকার হইলে যা ৪,০০০/= টাকা এবং অন্যান্য এলাকার করদাতার ক্ষেত্রে যা ৩,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

অর্থ আইন–২১ অনুযায়ী করহারের তফসিল মোট করযোগ্য আয় করহার

  • প্রথম ৩০০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয়কর শূন্য
  • পরবর্তী ১০০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয়কর ৫%
  • পরবর্তী ৩০০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয়কর ১০%
  • পরবর্তী ৪০০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয়কর ১৫%
  • পরবর্তী ৫০০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয়কর ২০%
  • অবশিষ্ট টাকার উপর আয়কর ২৫%

ব্যক্তি আয়ের উপর আয়করের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। একজন ব্যাংক কর্মকর্তা সাধারনত: বেতনখাতে- বেসিক বেতন, হোম রেন্ট, চিকিৎসা ভাতা, মহার্ঘভাতা, উৎসব ভাতা, ছুটি ভাতা, বিশেষ ভাতা, বোনাস, ভবিষ্যৎ তহবিলে চাঁদা, যাতায়াত ভাতা, গ্র্যাচুইটি, সুপার এ্যানুয়েশন ফাণ্ড ইত্যাদি উপখাত সমূহে আয় করে থাকেন।

এছাড়াও সঞ্চয়পত্রের লাভের অংশ, শেয়ারে/ ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগের লভ্যাংশ, ব্যাংক জমা হতে প্রাপ্ত মুনাফা/ সুদ, বীমা পলিসি হতে প্রাপ্ত বোনাস/ মুনাফা, দান, বাড়িভাড়া, জমি বিক্রি, শেয়ার বিক্রি হতেও আয়ের সুযোগ রয়েছে। নিয়োগকর্তার কাছে থেকে যানবাহনের জন্য গাড়ি পেলে তার জন্য ৬০,০০০ টাকা বা মূল বেতনের ৫ শতাংশের মধ্যে যেটা বেশি সেটাও মোট আয়ের সাথে অন্তর্ভুক্ত হয়।Written by: এ.এস.এম. জসিম উদ্দিনঃ

[আমাদের ওয়েবসাইটের আর্টিকেল বই, অনলাইন, বিভিন্ন তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট থেকে আংশিক বা অংশ বিশেষ নেওয়া হয়ে থাকে। আমাদের দেওয়া আর্টিকেল নিয়ে কোন মতামত, পরামর্শ অভিযোগ ইত্যাদি থাকলে আমাদের মেইল করতে পারবেন। আপনার অভিযোগ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যাচাই করে সমাধান দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।]

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন